সর্বশেষ

দাবী না মানা হলে শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা আসবে

গতকাল ৩০ শে জুন সম্মিলিত শিক্ষানবিশ আইনজীবী সংগ্রাম পরিষদ  ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক প্রেস কনফারেন্স এর আয়োজন করে। বক্তারা গেজেটের মাধ্যমে সনদ প্রদানের যৌক্তিকতা তুলে ধরে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। বার কাউন্সিল তাদের দাবী দাওয়া না মেনে নিলে আরো কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা আসবে বলে তারা জানান। উক্ত কনফারেন্স থেকেই আগামী ৭ জুলাই বার কাউন্সিল ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচীর ঘোষণা করেন।


২০১৭ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারী ” বাংলাদেশ বার কাউন্সিল বনাম দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটি ” মামলার প্রদত্ত রায়ের নির্দেশনাতে আপিল বিভাগ বলেছিলো ” The Bar Council shall complete the enrollment process of the applicants to be enrolled as advocates in the district court each calendar year. ” কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে আপিল বিভাগের এই নির্দেশনা দেওয়ার তিন বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর নির্দেশনাটি কার্যকর করা হয়নি। উপরন্তু ২১ শে জুলাই ২০১৭ এর পর ২ বছর ৭ মাস পরে আরেকটি প্রিলিমিনারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। এতো দীর্ঘ সময় পরে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা পারিবারিক – সামাজিক – আর্থিক চাপের মধ্যে আছে, তারসঙ্গে বর্তমান করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতা ও লিখিত পরীক্ষা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য অনিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা হতাশায় ভুগছে। এছাড়াও বর্তমান করোনা ভাইরাস মহামারীতে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল ও আইনজীবীদের জন্য ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের জন্য কোনো অর্থ বরাদ্দ এবং সহায়তা প্রদান করেনি। দীর্ঘ ৫ বছরে একটি মাত্র এনরোলমেন্ট পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ায় এবং বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা মানবেতর জীবনযাপন করছে।

ইতিপূর্বে সর্বশেষ এনরোলমেন্ট পরীক্ষাটি শেষ হতে সময় লেগেছিলো ১ বছর ৫ মাস। বর্তমান করোনা মহামারী কবে নিরসন হবে সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। যারফলে, লিখিত পরীক্ষা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য অনিশ্চিত। এমন অবস্থায় যদি পরিস্থিতি বিবেচনা করে ২০১৭ ও ২০২০ সালে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণদের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা বাতিল করে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করা না হয় সেক্ষেত্রে আগামী ২০২১ সালেও বর্তমান এনরোলমেন্ট পরীক্ষার সম্পূর্ণ কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। এরফলে পরীক্ষার জট আরো দীর্ঘায়িত হবে এবং আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ী ২০২১ সালে আরেকটি এনরোলমেন্ট পরীক্ষার প্রসেস সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না।

শিক্ষানবিশ আইনজীবী সুমনা আক্তার লিলি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আইনের ছাত্র ছিলেন, তিনি সারাজীবন মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই সংগ্রাম করে গেছেন। কিন্তু আজ আমরা জাতির জনকের বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করে আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত, ৩ বছর একটি পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করছি। বার কাউন্সিলের বর্তমান কমিটি যেহেতু এখন পর্যন্ত কোনো এনরোলমেন্ট পরীক্ষা পুরোপুরি সম্পন্ন করতে পারেনি এবং বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে লিখিত পরীক্ষা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য অনিশ্চিত সেহেতু ২০১৭ ও ২০২০ সালে প্রিলিমিনারি উত্তীর্ণদের লিখিত ও ভাইভা মওকুফ করে গেজেট প্রকাশ করে ২০২০ সালেই সনদ প্রদান করা হোক। মুজিব শতবর্ষ থেকেই আপিল বিভাগের রায় কার্যকর করা হোক।

শিক্ষানবিশ আইনজীবী আইনুল ইসলাম বিশাল বলেন, The Bangladesh Legal Practitioners and Bar Council Order, 1972 এর Article 40(1) এবং 40(2)(m) অনুযায়ী গেজেট বা প্রজ্ঞাপন দ্বারা ২০১৭ ও ২০২০ সালে প্রিলিমিনারি উর্ত্তীর্ণদের সনদ প্রদান করতে কোনো বাধা নাই। উপরোক্ত দুইটি অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ২০১৭ ও ২০২০ সালে প্রিলিমিনারি উর্ত্তীর্ণ শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিতে পারেন।

No comments