বিভিন্ন দেশের হাস্যকর আইন
বিশ্বের অনেক দেশে এমন হাস্যকার আইন রয়েছে আর মজার বিষয় হচ্ছে এ সম্পর্কে ব্রিটেনের একজন লেখক একটি বইও লিখেছেন। বইটির নাম ‘হাস্যকর আইন’। বই-এ বিশ্বের ২৫০টি দেশের সবচেয়ে উদ্ভট আর হাস্যকর আইন সংগ্রহ করে পাঠকদের কাছে প্রকাশ করেছে।
● ফ্রান্সে নারীদের পাজামা পরা নিষিদ্ধ ছিল ২০১৩ সালের ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত। হাস্যকর এই আইনটি ১৮০০ সালে কার্যকর হয়। আইনে বলা হয়েছিল, প্যারিসের নারীরা যদি পুরুষের মতো পাজামা পরতে চায়, তাহলে প্রথমে প্যারিসের পুলিশ দপ্তরের অনুমোদন নিতে হবে। গত ৩১ জানুয়ারি ফ্রান্সের নারী অধিকার মন্ত্রী একটি দলিলে স্বাক্ষর করে ২০০ বছরেরও বেশি পুরাতন এই উদ্ভট হাস্যকর আইনটি বাতিল করেছেন। তার মানে ফ্রান্সের নারীরা মাত্র বছর পাঁচেক ধরে বৈধতার সাথে পাজামা পড়ছে, এর আগে পর্যন্ত যা ছিল অবৈধ। আমরা সবাই জানি প্যারিস এবং ফ্রান্স হল বিশ্বের ফ্যাশন স্টাইলের উৎস। সেখানকার নারীরা সুন্দর হতে অনেক আগ্রহী। অথচ এরকম একটি আইন এই দেশেই প্রচলিত থাকলো ২০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে। ২০১২ সালের জুলাইয়ে, ফ্রান্সের আরেকজন পার্লামেন্ট সদস্য এই আইন বিলুপ্তির আহ্বান জানিয়ে বলেন, এ আইন ফ্যাশন সম্পর্কে আমাদের বিশ্বাস আর রুচিকে অপমান করছে, বিব্রত করছে।
● বর্তমানে স্মার্টফোন জনগণের মধ্যে অনেক জনপ্রিয়। এই ফোনে বিশেষ কিছু অপশন আছে যা নির্দিষ্ট কিছু সফটওয়ারের মাধ্যমে লক বা আনলক করতে হয়। তাই স্মার্টফোন ব্যাবহারকারীরা যার যার নিজের স্মার্টফোনটিকে আনলক করে আরো বেশি এবং সহজে বিভিন্ন মজার মজার সফটওয়ার ইনস্টল করতে চায়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় লাইব্রেরি ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে একটি নতুন আইন প্রণয়ন করেছে যে স্মার্টফোনের বিশেষ কিছু অপশন তাদের অনুমতি ছাড়া আনলক করা যাবে না। কেননা এভাবে নির্বিচারে ব্যবহার করলে তা বিভিন্ন সফ্টওয়ারের কপিরাইট বা মেধাস্বত্ব লঙ্ঘন করবে। অবশ্য এটি ব্যবহারে একটি পূর্বশর্ত আছে, আর তা হলো টেলিযোগাযোগ কোম্পানির অনুমোদন ছাড়া স্মার্টফোন আনলোক করা আইনত দণ্ডযোগ্য অপরাধ। এ আইনটি শুনতে যুক্তিযুক্ত মনে হয়। মার্কিন নেট ব্যবহারকারীরা বলেন, এই আইন হলো ২০১৩ সালের সবচেয়ে হাস্যকর আইন। যেমন, যদি কোনো মানুষ জেনুইন এবং অথরাইজড একটি ভিডিও ক্রয় করে, সেটি স্মার্টফোনের মাধ্যমে দেখার সুযোগ নেই। এটা কেন দেখা যাবে না বা কেন আমাদের ফোনকে আনলোক করে সংশ্লিষ্ট সফটওয়ার ইনস্টল করার অধিকার নেই?
● কম্পিউটার গেম নিয়ে মজার আইনটি চালু আছে গ্রিসে। কম্পিউটার গেম বর্তমানে খুব জনপ্রিয়। বাসায় অথবা ভ্রমণ পথের যেকোনো স্থানে সময় কাটাতে চাইলে গেম খেলতে পারেন। তবে যদি আপনি গ্রিসে ভ্রমণ করেন, তাহলে মনে রাখবেন, সে দেশে পিসি গেম খেলার কথা চিন্তায়ও আনবেন না। কারণ সে দেশের আইন অনুযায়ী, পিসি গেম খেললে তিন মাসের জেল খাটতে হবে এবং এর সাথে ১০ হাজার ইউরো জরিমানাও গুনতে হবে।
● গ্রিস সরকার জুয়া খেলা নিয়ন্ত্রণের জন্য এমন আইন জারি করেছে। তবে অনেকেই বলে, যদি জুয়া খেলা নিষিদ্ধ করতে চায়, তাহলে তো কেবল ক্যাফে এবং পানশালার ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা যথেষ্ট। অবশ্য বসায় বসে খেললে আইনের দৃষ্টিতে কোনো অসুধিবা হবে নেই।
● ‘হাস্যকর আইন’বইতে লেখা আছে, থাইল্যান্ডে আন্ডারওয়ার না পরে বাইরে যাওয়া আইনত দণ্ডনীয়। আবার কোমরের ওপর খোলা শরীর নিয়ে গাড়ি চালানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
● সুইডেনে খুব মজার একটি আইন আছে। সুইডেনের আইন অনুযায়ী, রাত দশটার পর টয়লেটে ফ্লাশ করা নিষিদ্ধ। ঘ্রাণশক্তি বা বায়ুদূষণের তুলনায় সুইডেন সরকার মনে করে শব্দদূষণ আরো গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। তাই যদি আপনি দশটার পর টয়েলেটে ফ্লাশ করেন তাহলে আপনি পরিষ্কারভাবেই আইন লঙ্ঘন করবেন এবং যথাযথ শাস্তি ভোগ করতে হবে আপনাকে।
● সুস্বাদু ফল হিসেবে কাঁঠালের জনপ্রিয়তা সর্বজনবিদিত। কিন্তু ব্রুনেইতে যদি আপনি কোনো প্রকাশ্য স্থানে কাঁঠাল খাওয়া শুরু করেন তাহলে আপনি শাস্তিযোগ্য অপরাধ করবেন। বাসে, সাবওয়েতে, হোটেলে এবং বিমানবন্দরে কাঁঠাল খেতে নিষিদ্ধ করেছে ব্রুনেই সরকার।
● সিঙ্গাপুরের একটি আইন যা খুব কঠোর এবং তা বিশ্ববিখ্যাত। আপনি কি চুইংগাম খাওয়া পছন্দ করেন? যদি কখনো সিংগাপুরে প্রকাশ্যে চুইংগাম খান, নিশ্চিতভাবে আপনাকে কারাগারে যাওয়ার জন্য তৈরি থাকতে পরো। ১৯৯২ সাল থেকে সিঙ্গাপুরে প্রকাশ্যে চুইংগাম খাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়।
No comments