হিন্দু আইনে ভরণপোষণের কিছু বৈশিষ্ট্য
১। একজন হিন্দুর কোন সম্পত্তি না থাকলেও সে তার নাবালক ছেলে, অবিবাহিত মেয়ে ও বাবা মায়ের ভরণপোষণ করতে আইনত বাধ্য। দায়াভাগা মতে, বাবা সাবালক ছেলেকে ভরণপোষণ করতে আইনত বাধ্য নন।
২। কর্তা যৌথ পরিবারের সকল পুরুষ, তাদের স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের ভরণপোষণে আইনত বাধ্য।
৩। একজন মৃত ব্যক্তি যাদের ভরণপোষণ করতে আইনত বাধ্য ছিল মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীও মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি হতে তাদের ভরণপোষণ করতে আইনত বাধ্য।
৪। বিবাহ না হওয়া পর্যন্ত বাবা তার কন্যা সন্তানের ভরণপোষণ করতে বাধ্য। বাবার অবর্তমানে কন্যার ভরণপোষণ বাবার সম্পত্তি হতেই চলতে থাকবে।
৫। অক্ষমতা ও অযোগ্যতা হেতু কেউ পৈতৃক সম্পত্তির অধিকারে বঞ্চিত থাকলে তাকে ও তার পরিবার বর্গকে অক্ষম ব্যক্তির বাবা ও বাবার অবর্তমানে বাবার উত্তরাধিকারী যথাযোগ্য ভরণপোষণ দিতে বাধ্য।
৬। হিন্দু আইনে স্ত্রী যদি ধর্মান্তরিত হয় অথবা যদি আইনসঙ্গত কারণ ছাড়াই স্বামীর সাথে স্ত্রীরূপে বসবাসে অনিচ্ছুক হয় তাহলে সে ভরণপোষণ পাবেনা। হিন্দু আইনে যেহেতু বিবাহ বিচ্ছেদ নেই, সেজন্য স্ত্রী যুক্তিসঙ্গত কারণে পৃথক বসবাস করলে ভরণপোষণ পাবেন।
৭। ১৯৪৬ সালের বিবাহিত হিন্দু নারীর পৃথক বাসস্থান ও ভরণপোষণ আইনানুযায়ী নিম্নোক্ত কারণসমূহের উদ্ভব হলে একজন বিবাহিত হিন্দু নারী স্বামীর কাছ থেকে পৃথকভাবে থেকেও ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী।
(ক) স্বামী যদি এমন কোন দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত থাকে যা সে স্ত্রীর কাছ থেকে পায়নি।
(খ) স্বামী যদি স্ত্রীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করে এবং নিষ্ঠুরতা যদি এমন পর্যায়ের হয় যে, তার জীবনাশংকার ভয় থাকে।
(গ) স্বামী যদি স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই তাকে পরিত্যাগ করে।
(ঘ) স্বামী যদি স্ত্রীর বর্তমানে পুনরায় বিয়ে করে।
(ঙ) স্বামী যদি ধর্মান্তরিত হয়।
(চ) স্বামী যদি ঘরেই কোন উপপত্মী রাখে অথবা অভ্যাসগতভাবে উপপত্মীর সাথে বসবাস করে।
No comments